ভিক্ষাবৃত্তির টাকায় তোলা ঘর ভেঙ্গে ফেলেছে ছেলে,গুরুতর জখমে হাসপাতালে

নব্বই উর্ধ্ব বয়সী ভিক্ষুক মা’কে ও ৪৮ বছর বয়সী দৃষ্টিহীন ভিক্ষুক মারধর করে গুরুতর জখম করে মাথা গোঁজার ঠাঁই ছাপড়া ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে মাদক ব্যবসায়ী মাদকসেবী পুত্র। এ অমানবিক সন্ত্রাসী ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠী ইউনিয়নের জামুরা গ্রামে।
এ ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় ছেলেকে প্রধান আসামী করে একটি এজাহার দায়ের করেছেন ২৫০ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতালে চিকিৎসারত ভিকটিম ভিক্ষুক মা নূরভানূ। সদর থানার ইনচার্জ আকতার মোর্শেদ এস আই পবিত্রকে ঘটনাটি তদন্ত পূর্বক সত্যতা যাচাই করে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ নং-এস.এল-২২৫, নাশি এস.এল-৯৯,৩১.০১.২০২১।
এজাহার ও হাসপাতালে চিকিৎসারত আহত নূরভানূ এবং স্বজনদের সূত্রে জানাগেছে, নুরভানু তার স্বামী কালু মৃধা কর্তৃক দেয়া দানপত্র দলিলের ভূমি ১৭০৫নং দাগের ৮৮ শতাংশ জমিতে ছাপড়া দিয়ে তার অন্ধ মেয়ে লুৎফুননেছাকে নিয়ে বসবাস করে আসছিল। এ অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী পুত্র শাহ আলম মৃধা (৫৫) ও শাহ আলমের ছেলে অফজাল (৩০)সহ কয়েকজন সন্ত্রাসী নুরভানূকে ও অন্ধ লুৎফুননেছাকে বাড়ি ছাড়া করার চেষ্টা করে। এক পর্যায় শাহ আলম অন্ধ লুৎফুননেছাকে বলে তোর কোন টাকা পয়সা নাই, তুই দুই কড়া জমি লিখে দেয়, আমি তোকে একটি ঘর তুলে দিবো। এ কথায় সরল বিশ^াসে লুৎফুননেছা ভাই শাহ আলমকে দুই কড়া জমি লিখে দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন হয় ঘর তুলে না দেয়ায় নুরভানু ও লুৎফুননেছা লেবুখালী ফেরীঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা করে কিছু টাকা পয়সা জোগার করে অন্য আরও বোন মিলে একটি ছাপড়া ঘর তুলে বসবাস করে আসছিল। ঘটনারদিন ২৭ জানুয়ারী বুধবার দুপুরে লুৎফুননেছা লেবুখালী ফেরীঘাটে অন্যান্য দিনের ন্যায় ভিক্ষা করতে গেলে শাহ আলম ও তার ছেলে আফজাল কতক সন্ত্রাসীদের নিয়ে ছাপড়া ঘরটি ভাঙ্গতে শুরু করলে নব্বই উর্ধ্ব বয়সী ভিক্ষুক নুরভানু ও তার বড় মেয়ে মাজেদা বেগম বাঁধা নিষেধ করলে মাদকসেবী শাহ আলম ও শাহ আলমের ছেলে আফজাল দেশী তৈরী লাঠি সোটা দিয়ে তাদের মারধর করে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা নুরভানু ও মাজেদা বেগমকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিস্ট পটুয়াখালী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ভিক্ষুক নুরভানু তার ছেলে শাহ আলমকে প্রধান আসামী করে নয় জনকে চিহ্নিত করে পটুয়াখালী সদর থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। অন্যান্য আসামীরা হচ্ছে সিদ্দিক মৃধা(৫০), আলী মৃধা(৪০), আলমাচ(৫৫), লতিফ মৃধা(৭০), ইউসুফ গাজী(৫৫), ইসমাইল গাজী(২৮), জোলেখা (৩০) ।
সদর থানার ইনচার্জ আকতার মোর্শেদ এস আই পবিত্রকে ঘটনাটি তদন্ত পূর্বক সত্যতা যাচাই করে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এসআই পবিত্র জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখেছেন যে, ওখানে ঘর ছিল কিন্তু এখন নাই। তবে কারা ভেঙ্গেছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ওরা গরীব মানুষ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে শালিস মানিয়ে দেয়া হয়েছে। শালিস না মানলে মামলা কোর্টে প্রেরন করার কথা জানান এসআই।